স্টাফ রিপোর্টার ::
তাহিরপুরে দুই হাতুড়ে ডাক্তার মিলে গর্ভবতীকে ব্লেড দিয়ে অস্ত্রোপচার চেষ্টাকালে নবজাতকের মাথা কেটে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামে এমন ঘটনা ঘটলেও শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
ঘটনার পর তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্ণেন্দু দেব ও তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে বড়খলা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, গত বুধবার দুপুরে বড়খলা গ্রামের সুজিত বর্মণের স্ত্রীর প্রসব ব্যথা উঠে। প্রসব ব্যথা অতিরিক্ত হওয়ার কারণে পরিবারের লোকজন বিষয়টি একই গ্রামের কথিত ডাক্তার লাল মোহন বর্মণ ও নুরুল আমিনকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক তারা সুজিত বর্মণের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে গর্ভবতীকে দেখে দুই হাতুড়ে ডাক্তার পরিবারের লোকজনকে জানায় পেটে থাকা বাচ্চাটি মৃত। খুব দ্রুত সিজার করতে হবে। না হলে বাচ্চার মায়েরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
হাতুড়ে ডাক্তাররা জানায়, তারা নিজেরাই সিজার করতে পারে! এমন অসহায় অবস্থায় পরিবারের লোকজনের সম্মতিতে নিজ বসতভিটায় দুই হাতুড়ে ডাক্তার ব্লেড দিয়ে যোনিপথ কেটে সিজার করার চেষ্টা করলে ব্লেডের আঘাতে বাচ্চাটির মাথার বিভিন্ন অংশ কেটে যায়। এমতাবস্থায় রক্তাক্ত বাচ্চাটিকে বাঁচাতে পার্শ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে ওই নারী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে সুজিত বর্মণ বলেন, আমার সুস্থ বাচ্চাটি এমনভাবে মারা গেল, মায়ের অবস্থাও খারাপ। আমি এখন কি করব ভাবতে পারছি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রেনু মিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা গ্রাম্যভাবে বসেছিলাম। রোগী সুস্থ হওয়ার পর আমরা একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে হাতুড়ে ডাক্তার নুরুল আমিন ও লাল মোহন বর্মণের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনাটি শুনে আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম এবং আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি।