গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল, “বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ ॥ তিন দিনে পাঁচ শতাধিক মামলা”। এই শিরোনামটি পাঠকের কাছে কি কোনও তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা বহন করে? যদি করে তবে সেটা কী? সহজ কথায় সেটি হলো, সড়কে অনিয়ম চলছে। বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের তৎপরতা কার্যত সেই অনিয়মগুলোকে ধরতে পেরেছে ও সড়কে অনিয়ম-নৈরাজ্য প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিজের সক্ষমতাকে প্রমাণ করেছে। এই সুবাদে ট্রাফিক পুলিশকে অভিনন্দন।
এ দেশ বিএনপির আমলে পর পর পাঁচ বার দুর্নীদিতে বিশ্বসেরা দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়ে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল যে, এ দেশে অনিয়ম দুর্নীতি হয় বিশ্ব মাপের নিরিখে উচ্চমাত্রায়। সে লজ্জা সহজে ভুলবার নয়। আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে সেদিনের পরিসংখ্যানটি কতোটা ফাঁপানো ছিল জানি না। তবে দেশে বিদ্যমান দুর্নীতির মাত্রাটা এতোটাই চোখে পড়ার মতো হয়ে পড়েছিল যে, সে- আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানটি ‘কীছু না’ বলে ঝেড়ে ফেলার মতোও কীছু ছিল না।
সেদিনের পরিসংখ্যানটি থেকে এই কথা বুঝা গিয়েছিল যে, এখানে বিশ্বের যে-কোনও দেশ থেকে আইন অমান্যের প্রবণতা বেশি। এমন একটি দেশের সড়কে অনিয়ম-দুর্নীতি চলবে না, সেটা একটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার। এখানে সড়কে অনিয়ম-দুর্নীতি চলবেই এবং সড়ক অনিরাপদ হয়ে উঠবেই, এটাই স্বাভাবিক। আর সুনামগঞ্জ সে দেশেরই একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে সড়কে সবরকমের নিয়মকানুন যান চালকরা ও পথচারীরা মেনে চলবে, তা আশা করা বাতুলতা মাত্র।
ট্রাফিক সপ্তাহের তিন দিনে ৫০০ মামলা হয়েছে। তা হতেই পারে। আমরা আশা করবো এইসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে এবং যানচালক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এর ফলে সড়কে চলাফেরা ও যানচলাচলের নিয়মকানুন, অর্থাৎ এক কথায় ট্রাফিক আইন, মেনে চলার প্রবণতা বাড়বে।