1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মাহরাম নদীতে উড়াল সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮

শামস শামীম ::
প্রাচীন বাংলার রাজধানী লাউড়, রূপের নদী যাদুকাটা, খাড়া-ঢালুর অনিন্দ্য বড়গোপ টিলা (বারেকের টিলা), হাজী জয়নাল আবেদীনের দৃষ্টিনন্দন শিমুল বাগান, টেকেরঘাট মুক্তিযোদ্ধা উপত্যকা এবং টাঙ্গুয়ার হাওরকে কেন্দ্র করে মাহরাম নদীতে উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে) নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সমীক্ষা শুরু করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে প্রকল্প গ্রহণ ও প্রাক্কলন করে পাঠাবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানা গেছে, তাহিরপুরে পর্যটন অবকাঠামো বিকাশের জন্য ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাহিরপুরে কৃষক সমাবেশে এসব স্থাপনাকে কেন্দ্র করে পর্যটনশিল্প বিকাশের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। পর্যটন শিল্প বিকাশ ও সীমান্তে সড়ক যোগাযোগ বিস্তৃতির লক্ষ্যেই সম্প্রতি যাদুকাটা নদীতে সিলেট বিভাগের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মিত দীর্ঘ সেতুর কাজ উদ্বোধন হয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুটির একটি পিলারের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। আরো ১৪টি পিলারের কাজ পানি কমলে শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
এদিকে মাহরাম নদীতে সেতু বা সড়ক না হলে সীমান্তের সৌন্দর্য্য বিকাশ বা পর্যটন শিল্পের কোনো উন্নতি হবেনা বা যাদুকাটা নদী পুরো সীমান্তকে যোগাযোগ আওতায় আনতে ব্যর্থ হবে এমনটা মনে করেন স্থানীয় লোকজনসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকবাল আহমেদ সম্প্রতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে মাহরাম নদীতে ৩০০ মিটার এলাকায় উড়াল সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন। এই প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে সমীক্ষা দল। জানা গেছে, চলতি বছরই মাহরাম নদীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন লাভ করবে। এটি বাস্তবায়ন হলে যাদুকাটা নদীতে নির্মিতব্য শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মহাপ্রভু সেতুর সুফল ভোগ করতে পারবে পুরো সীমান্তবাসী। যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম হলে এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্পও বিকাশ লাভ করবে এবং দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে আকর্ষণ বাড়বে। বিশেষ করে টাঙ্গুয়ার হাওর ও ট্যাকেরঘাট খনি প্রকল্পের সৌন্দর্য্য ভোগান্তি ছাড়াই সড়কপথে সহজে উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাহিরপুরে কৃষক সমাবেশে টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা নদী, বড়গোপটিলা, লাউড়েরগড়, শাহ আরেফিন মাজার, টেকেরঘাট খনি প্রকল্পকে কেন্দ্র করে পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। নির্দেশনার পর কিছুদিন চিঠি চালাচালি হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ঢিমেতালে চলছিল কাজটি। তবে তিন বছর আগে পর্যটন করপোরেশন টাঙ্গুয়ার হাওর ও বড়গোপ টিলায় ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেছে। চলতি বছর যাদুকাটা নদীতে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট বিভাগের ৭৫০ মিটার দীর্ঘ দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণ কাজ চলছে। আগামী ২ বছরের মধ্যেই সেতুর কাজ সম্পন্ন হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মাহরাম নদীতে সড়ক বা সেতু না হলে যাদুকাটা নদীর সুফল ভোগ করতে পারবেনা তাহিরপুর সীমান্তের লোকজন। তাছাড়া পর্যটন স্পটগুলোও পড়েছে সীমান্তে। যে কারণে পর্যটন সম্ভাবনা ও যোগাযোগ সুগমের কথা বিবেচনা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর স্থানীয় দাবির প্রেক্ষিতে মাহরাম নদীতে এলিভেটেড সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
বাদাঘাট ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য মনোয়ারা বেগম বলেন, বিন্নাকুলি এলাকায় যাদুকাটা নদীতে সেতু নির্মাণ আমাদের জন্য আনন্দের। কিন্তু মাহরাম নদীতে যোগাযোগের জন্য কোন স্থাপনা না থাকলে পুরো সীমান্তের মানুষ সরাসরি যোগাযোগের আওতায় আসবেনা। যে কারণে ওই অঞ্চলের পর্যটনের বিকাশও ঘটবেনা। তাই মাহরাম নদীতে উড়াল সড়ক নির্মাণ অবশ্যই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, তাহিরপুর পুরো জেলার পর্যটনের ব্র্যান্ডিং করে। বিন্নাকুলিতে যে সেতু হচ্ছে সেটা পুরো সীমান্তকে সরাসরি যোগাযোগের আওতায় আনতে পারবেনা। সরাসরি যোগাযোগের আওতায় আনতে হলে মাহরাম নদীতে অবকাঠামো করতে হবে। এখানে এলিভেটেড সড়ক নির্মিত হলে যোগাযোগ সহজ হবে এবং দৃষ্টিনন্দন পর্যটন অবকাঠামো হিসেবে আকর্ষণ সৃষ্টি করবে। এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হোক।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকবাল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রকল্প হিসেবে মাহরাম নদীতে ৩০০ মিটার এলিভেটেড সড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। শীঘ্রই ওই এলাকার পর্যটন শিল্প বিকাশের কথা মাথায় রেখে এখানে বিশেষ সড়ক হবে। তাছাড়া যাদুকাটা নদীতে বিন্নাকুলিতে সেতুর কাজও এগিয়ে চলছে। এই সেতুর কাজ হলে তাহিরপুর সীমান্তের পর্যটন স্পটগুলো সহজলভ্য যোগাযোগের কারণে পর্যটকদের মধ্যে আকর্ষণ তৈরি করবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com