স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে এবার ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ৯৭ হাজার ১৮১জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আগামী ১৪ জুলাই সকাল ৮টা থেকে থেকে জেলার ২২৩০টি কেন্দ্রে একযোগে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। জেলার ৬টি দুর্গম উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নে পরদিন ১৫ জুলাই থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থায় ভিটামিন এ খাওয়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলা ইপিআই ভবনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের নিয়ে অবহিতকরণ ও কর্ম পরিকল্পনা সভায় এই তথ্য জানান সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ।
জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন ১৪ জুলাই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সিভিল সার্জন অফিসের কোল্ড টেকনেশিয়ান মো. ফজলুল করিমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারি উপ-পরিচালক ডা. ননীভূষণ তালুকদার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওমর ফারুক। প্রজেক্টরের মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সম্পর্কে নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল কালাম।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক কামরুজ্জামান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ বলেন, আগামী ১৪ জুলাই সারাদেশের ন্যায় সুনামগঞ্জেও জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৬-১১ মাস বয়সী শিশুকে ১টি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোসহ ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। জেলার ১১টি উপজেলার ৬-১১ মাস বয়সী মোট ৪৩ হাজার ৩৩৮ জন শিশু এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর আওতায় আনা হয়েছে। জেলার ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশুর সংখ্যা রয়েছে ৪৪৮ জন এবং ১২-১৫ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশুর সংখ্যা ৩ হাজার ৯৩৬ জন। তাদেরকেও ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। পরবর্তী ৪দিনের মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাদপড়া শিশুদেরকে খুঁজে বের করে অবশ্যই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এ কর্মসূচির আওতায় যাতে সকল শিশু আসে এবং যাতে কেউ বাদ না পড়ে সেজন্য তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
তিনি আরো বলেন, একই সঙ্গে শিশুর বয়স ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার পর থেকে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোসহ অন্যান্য পুষ্টি বার্তা প্রচার করা হবে। এই ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানোর ফলে শিশু রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা পায়। তবে শুধু রাতকানা রোগ থেকেই নয়, ভিটামিন ‘এ’ শিশুদের আরো বহুবিধ উপকার করে। এর মধ্যে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
ডা. আশুতোষ দাশ জানান, এই ক্যা¤েপইন মনিটরিংয়ের জন্য সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে। কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগ ফোন নম্বর ০৮৭১-৬১৭০৭। তিনি আরো জানান, যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ক্যাম্পেইন পরবর্তী সময় হতে ওইদিন সারারাত প্রতিটি উপজেলার সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী স্ব স্ব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করবেন এবং সার্বক্ষণিক মোবাইল ও জরুরি বিভাগে মেডিকেল টিম কর্মরত থাকবে।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কোল্ড টেকনেশিয়ান মো. ফজলুল করিম এবং গীতাপাঠ করেন সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ। এসময় জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।