পত্রিকায় প্রকাশ যে-কোনও মূল্যে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। মনে হতে পারে, দেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করা আবার কী? এর উদ্যোগই বা আবার কী? এসব আবার কখনও হয় না কি? দেশে তো ভিক্ষুক থাকবেই। ভিক্ষুক ছাড়া আবার কোনও দেশ হয় না কি? দেশের অনেক মানুষের চিন্তাভাবনা এই রকমই। তাঁরা ভাবতেই পারেন না যে, পৃথিবীতে এমন দেশ আছে যেখানে কোনও ভিক্ষুক নেই। আমাদের দেশ বাংলাদেশ কেন ভিক্ষুকমুক্ত দেশ হবে না? বাংলাদেশ ভিক্ষুকমুক্ত দেশ অবশ্যই হবে।
এতোদিন এই দেশকে ভিক্ষুকের দেশ করে রাখা হয়েছে। দেশি-বিদেশি শাসক-শোষকরা দেশটাকে শোষণ করে ছিবড়ে বানিয়ে দেবার জোগাড় করেছিল। এই দেশকে শোষণ করেছে ব্রিটিশরা, পাকিস্তানিরা। স্বাধীনতার পর পর আমেরিকা এ দেশকে বলেছে তলাবিহীন ঝুড়ি। রাষ্ট্রস্থপতি বঙ্গবন্ধুকে দেশোন্নয়নের কোনও সুযোগ না দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি শত্রুরা মিলে ষড়যন্ত্র করেছে, শেষ পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করে দেশকে আর্থনীতিকভাবে পিছিয়ে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় লিপ্ত থেকেছে প্রায় দুই দুইটি দশক। অন্যদিক থেকে দেখলে একাত্তরে দেশের লোকসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি, তখন দেশে খাদ্যঘাটতি ছিল ও ছিল ভিক্ষুকও। এখন লোকসংখ্যা ১৬ কোটির অধিক, কিন্তু দেশে খাদ্যঘাটতি নেই। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে এখন দেশে ভিক্ষুক থাকবে কেন?
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি শিরোনাম ছিল, ‘দেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ’। এই উদ্যোগের আওতায় এলাকাভিত্তিক ভিক্ষুকদের তালিকা করে বিশেষ সমিতি গঠন করা হবে, তৎপর হবে ভিক্ষুক উন্নয়নের প্রকল্প বাস্তবায়ন। অতীতে দেখা গেছে এই ধরনের সরকারি উদ্যোগগুলো দুর্নীতিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে বিশেষ সফলতা পায়নি বরং ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে, এমনকি বাংলাদেশে রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরির অধিকারী হয়েছে পর্যন্ত। কথায় বলে, ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। তাই বলি, আশা করি এবার আগে থেকেই সংশ্লিষ্টরা সতর্ক থাকবেন। ভুয়া ভিক্ষুকরা যেনো আবার তালিকায় ঢুকে না পড়ে।