1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

যাকে নৌকা মার্কা দেবো : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৩ জুন, ২০১৮

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কে প্রার্থী সেটা বড় কথা নয়, নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে জনগণের কাছে যেতে হবে। নির্বাচনে আমরা যাকে প্রার্থী করবো, নৌকা মার্কা দেবো, তার পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে। এজন্য এখন থেকে জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হবে। দলের মধ্যে ঐক্য রাখতে হবে, ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।’
শনিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দলে তৃণমূলকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে উন্নয়ন করেছি তাতে মানুষ নৌকায় ভোট দেবে না, তা হতে পারে না। যদি না দেয় সেজন্য তৃণমূলের আপনারাই দায়ী থাকবেন। কারণ, আপনারা সঠিকভাবে মানুষের কাছে যেতে পারেননি। তাদের কাছে সরকারের উন্নয়নের কথা বলতে পারেননি। তাদের বোঝাতে পারেননি। আমরা যে কাজ করেছি তা অন্য দল করেনি। তাহলে কেন তারা ভোট পাবে?
প্রার্থী হতে গিয়ে কেউ আওয়ামী লীগের বদনাম করলে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটি বিষয় লক্ষ করছি, কেউ কেউ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রার্থী হয়ে গেছেন। প্রার্থী হয়ে তারা বিএনপির লুটপাট-সন্ত্রাসের কথা বলে না, তাদের বক্তব্যে এসে যায় আমার আওয়ামী লীগের এমপির বিরুদ্ধে, সংগঠনের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু প্রার্থী হতে গিয়ে আমার দলকে বদনামে ফেলবে, এটা কোনও মতেই মেনে নেবো না। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। আমার সরকার উন্নয়নের কাজগুলোর কথা না বলে কোথায় কার বিরুদ্ধে কী দোষ আছে, সেটা খুঁজে জনগণকে যারা বলবেন, তারা কখনও আওয়ামী লীগের নমিনেশন পাবেন না। এটা পরিষ্কার কথা। আমি এগুলো কিন্তু রেকর্ড করছি। যারা দলের বিরুদ্ধে বদনাম করবে সে কী বোঝে না যে এতে তার ভোটও নষ্ট হবে। ১০ বছর সরকারে থাকার পর যদি কেউ দলের বিরুদ্ধে বদনাম করে তাহলে জনগণ তো তাকেও ভোট দেবে না। এটা হলো বাস্তবতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। বলতে হবে আমরা এই কাজ করছি, এই কাজ করবো। ভোটের রাজনীতি করতে গেলে নিজ এলাকায় আমাদের উদ্যোগের মানুষকে বলতে হবে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসা মানেই যে জনগণের দুর্ভোগ তা তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন, নির্বাচন মানেই তা চ্যালেঞ্জিং হবে। এটা কিন্তু আমাদের জন্য একটানা তৃতীয়বার। এই তৃতীয়বারের নির্বাচনে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, দেশের জনগণ কিন্তু খুবই হিসাবী। কেউ দুর্নীতি করলে তারা তা ভুলে যায় না। কাজ করতে গিয়ে টাকা দেবে আর ভোট চাইতে গেলে বলবে টাকা দিয়ে কাজ নিছি ভোট দেবো কেন? জনগণের চোখ কিন্তু খুলে গেছে। সময় খুব বেশি নেই। পুরনো কেউ নমিনেশন পাবেন কিনা তা নির্ভর করবে আপনার এলাকায় কতটুকু জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারলেন আর কতটুকু তৃণমূলকে মূল্যায়ন করলেন, তার ওপর। কাজেই বলবো দুঃসময়ের যারা নেতাকর্মী, যারা দুঃসময়ে দলের হাল ধরে রাখে, তারা যেন অবহেলিত না হয়।
দলে অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয়দাতাদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকার কারণে বিভিন্ন দল থেকে আমাদের দলে ছুটে আসছে। আর গ্রুপ করার জন্য বাছ-বিছার না করে যাকে পাচ্ছে তাকে নিয়ে নিজের শক্তি দেখাতে চান। এরা আসে মধু খেতে, এরা আপনার সঙ্গে থাকতে আসে না। কাজ করতে আসে না। এছাড়া যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে, সন্ত্রাস করে মামলার আসামি হয়েছে সেই মামলা থেকে বাঁচতে আসছে। আর একটি অংশ আসছে ক্ষমতার কাছে থেকে পয়সা কামাতে। আমি সারাদেশে সার্ভে করে বের করেছি। কাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তাদের মধ্যে কারা আমার দলের। সেই তালিকা আমার কাছে রয়েছে। কাজেই বলবো, কেউ যদি তাদের প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন এখনই বিদায় করেন। কারণ তারা দুঃসময়ে থাকবে না। অনেকে এসে দলে কোন্দল করে খুনখারাবি করে দল দলকে খুন করেছে বলে বদনাম দেবে। এসব বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। দলের লোক আপন নয়, বাইরের লোক আপন হয়ে গেছে- এটা মনে করার কোনও সুযোগ নেই। তারা কিন্তু আপন হবে না। নিজের লোকদের চিনতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার জয়লাভ করে সরকার গঠন করতে পারে, সেই চিন্তা নিয়ে কাজ করতে হবে। কে কী পেলাম না পেলাম সেই হিসাব না করে, দেশের জন্য কী করতে পারলাম, আগামীকে কী করবো-সেটা মাথায় রেখে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, জোট করেছি, মহাজোট করেছি। দলের স্বার্থে এটা করতে হয়েছে। আগামীতেও আমরা এটা করবো। আমরা বন্ধু হারাবো না। সবাইকে নিয়েই থাকতে চাই। এজন্য যতটুকু আত্মত্যাগ করতে হবে তা করবো। বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বটা এক্ষেত্রে বেশি।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নাকি জুয়া খেলে অর্থ উপার্জন করে, সেই জুয়াড়–, মাদকসেবী, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ আর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারা কেন ভোট পাবে? সেই দল কেন ভোট পাবে? এই প্রশ্নের উত্তর তো আমি পাই না। যদি বিএনপি-জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী ক্ষমতায় আসে তাহলে এই দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যে উন্নয়ন আমরা করেছি তা থেকে পিছিয়ে লুটপাট করে খাবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে। ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি করে কেউ আসতে পারবেন না। জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। নির্বাচন যেন স্বচ্ছ হয়। কেউ যেন নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে না পারেন। আমরা ভোটচুরির বদনাম নিতে চাই না। জনগণের মন জয় করে তাদের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে।
পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। দোষারোপ করেছিল। একজন সুদখোরের পক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে মার্কিন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে এই পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করে দিলো। তারা আমাদের দুর্নীতির বিষয়ে দোষারোপ করতে চেয়েছিল। আমি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, বলেছিলাম, আমরা দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসিনি। জনগণের ভাগ্য করতে এসেছি। বললাম কী দুর্নীতি তার প্রমাণ দিন। ওই দুর্নীতির প্রমাণ দিতে গিয়ে বেরুলো বিএনপির মন্ত্রীর দুর্নীতির তথ্য। অবশেষে কানাডার কোর্ট রায় দিতে বাধ্য হয়েছে পদ্মা সেতুর দুর্নীতির সব অভিযোগ ভুয়া ও মিথ্যা। তারা কোনও দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারেনি।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরির উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ঘোষণা দিলাম নিজেরাই পদ্মা সেতু করবো। বিশ্বব্যাংকের থেকে টাকা নেবো না। অনেক বাধা এলো। কিন্তু আমি সাহস পাই বাংলার জনগণের ওপর। ভরসা করি আওয়ামী লীগের তৃণমূলের ওপর। অনেকেই বলেছেন, এটা সম্ভব নয়। বললো, বিশ্বব্যাংক ছাড়া এটা হবেই না। ভালোভাবে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে তিনি এ সময় সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতাসীন হওয়ার পর কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ওরা ক্ষমতায় আসা মানেই জনগণের জন্য দুর্ভোগ; এই কথাগুলো জনগণের কাছে বলতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে বলেও জানান তিনি। “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি; এই বাংলাদেশে কোনো জঙ্গিবাদের স্থান হবে না, সাথে সাথে এই মাদকেরও কোনো স্থান হবে না। এই মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল হামিদ খান ভাসানী, প্রথম সাধারণ স¤পাদক শামসুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, জাতীয় চার নেতা, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে যারা জীবন দিয়েছেন এবং জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানান। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ওবায়দুল কাদের।
এর আগে সূর্যোদয়ের ক্ষণে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সারাদেশের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু হয়। শেখ হাসিনা সকালে ৯টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com