1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জাল মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট : ঘরশত্রু বিভীষণকে উপেক্ষা করা ঠিক নয়

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮

দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। পাকিস্তানিদের প্রতরণা থেকে মুক্তির জন্যে। সে-প্রতারণা ছিল শাসন-শোষণের নিমিত্ত একটি আর্থসামাজিক-রাজনীতিক চক্রান্ত। তৎকালের পূর্ববাংলাকে স্বাধীনতার নামে সেদিন শোষণের ঔপনিবেশিক ইঁদুরকলে আটকে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার সাড়ে চার দশক অতিক্রমের পর মনে হচ্ছে, দেশ সেই একই চক্রান্ত-প্রতারণার ইঁদুরকলে আটকে আছে। অবস্থার খুব বেশি একটা ফেরফের কীছু ঘটেনি। স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার এখনও দাপটের সঙ্গে তার প্রতারণা-চক্রান্তের জাল বিস্তারে তৎপর আছে। ক্ষেত্র বিশেষে এমনকি তারা রাজাকার থেকে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে উঠছে। যে বা যারা মুক্তিযোদ্ধা নয় তারা মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করে চলেছে নির্বিঘেœ। দখল করে নিচ্ছে যাবতীয় রাজনীতিক, সামাজিক ও আর্থিক সুবিধা। তফাৎটা শুধু তখন চক্রোন্তের হোতারা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি বিজাতি আর এখন স্বজাতি-স্বদেশি দুর্নীতিবাজ, দেশের মাটিতে দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক।
এই প্রতারণা-চক্রান্তের নমুনা মেলে গতকালের সুনামকণ্ঠে পরিবেশিত একটি সংবাদে। সংবাদে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের বরাবরে মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে অভিযোগ পেশ করেছেন। তার অভিযোগ থেকে বর্তমানে সংঘটিত হচ্ছে এমন প্রতারণা-জালিয়াতির বিষয়ে সম্যক ধারণা করা যায়। জানা যায় : (১) সমাজে মুক্তিযোদ্ধার জাল সার্টিফিকেটের অধিকারী এক শ্রেণির ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার আবির্ভাব ঘটেছে (২) তারা যে সার্টিফিকেট ব্যবহার করে তাতে কোনও স্মারক নম্বর, ক্রমিক নম্বর নেই। যা সাধারণত প্রকৃত সার্টিফিকেটে অবশ্যই থাকে। (৩) এই জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় স্কুল-কলেজে সন্তান ভর্তি, সরকারি চাকরি গ্রহণ, ব্যাংক থেকে ঋণসহ নানাবিধ সুবিধা গ্রহণ করা হচ্ছে। (৪) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই না করে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে তাদের সহযোগিতা করায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, যে-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের মানুষের মুক্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার কথা ছিল সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা কৌশলে নস্যাৎ করে দিয়ে নিজেদের স্বার্থোদ্ধারের হাতিয়ারে পরিণত করছে। এমনটা চলতে পারে না। যারা এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে অচিরেই বিচারের সম্মুখিন করা হোক। জাল সার্টিফিকেটধারীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে প্রদত্ত সুবিধাদি প্রত্যাহার করাসহ কৃত প্রতারণার বিচার করা হোক। এমনকি যে-সব কর্মকর্তা এইসব জাল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে প্রতারকদেরকে সুবিধাদি দিয়েছেন, তাঁদের সম্ভাব্য অসতর্কতার বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে উদ্দেশ্য প্রণোদিত কিনা সেটা খতিয়ে দেখে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। মনে রাখতে হবে এই অসতর্কতার পেছনে হয় তো সচেতন যোগসাজশের সক্রিয় ভূমিকা আছে। আর এটা যদি সত্যি প্রমাণিত হয় তবে, মুক্তিযুদ্ধবিরোধিতার প্রকল্পটি একটি আলাদা প্রাতিষ্ঠানিকতার মাত্রা পেয়ে যাবার যুক্তিযুক্তকতা অর্জন করে ফেলে। বিষয়টা আর ফেলনা মামুলি কোনও বিষয় থাকে না। বরং সেটা অত্যন্ত ভয়ংকর একটা কীছু, যাকে বলে, ঘরশত্রু বিভীষণের রাজনীতিক ষড়যন্ত্র হয়ে উঠে। ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশকে এখন রোহিঙ্গা সমস্যা ঘাড়ে নিয়ে বহির্শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হচ্ছে। ঘরশত্রু বিভীষণকে এখনও কীছুতেই উপেক্ষা করা ঠিক নয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com