বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়ে গেল। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচানোর অঙ্গীকার শিরোধার্য করে প্রতি বছরের মতো এ বছরও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হয়েছে, সারা বিশ্বে প্রায় ১০০টির মতো দেশে। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির উদ্যোগে ১৯৭২ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু পরিবেশ দূষণের মাত্রা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে, কমছে না। ইতোমধ্যে পরিবেশ দূষণের কারণে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীকে মরণোন্মুখ একটি গ্রহ বলে ঘোষণা করেছেন। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল, ‘প্লাস্টিক দূষণকে পরাস্ত করা।’
বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণ ঠেকানোর বাস্তবে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেই। যদিও ২০০২ সালে পলিথিনের ব্যাগ উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ২০১০ সালে পণ্যের মোড়ক হিসেবে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের আইন করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ‘আইন পাসের বাইরে কোনও কার্যকারিতা’ নেই আইন দু’টিরই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় যেমন লোকে প্রকাশ্যে ধূমপান করে পঞ্চাশ টাকা জরিমানা থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে, তেমনি লোকে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগে বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরছে নির্বিঘেœ। যে-সব পণ্যে মোড়ক প্রয়োজন সেসব পণ্যের প্রায় সবগুলোতেই প্লাস্টিকের মোড়ক ব্যবহৃত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনরা নিজেরা সেসব পণ্য ব্যবহার করছেন না এমনও নয়। মোট কথা আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না। আইন থাকার পরও আইনকে কার্যকর না করার পেছনে কোনও না কোনও রহস্য কিংবা কারণ আছে বলে অনেকেই মনে করেন।
দেশ দূষণের প্রতিক্রিয়ায় ধুকছে। ক্ষতিগ্রস্ততায় আক্রান্ত জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ মারাত্মকবাবে আহত। শহরের জলনিষ্কাশনের নালাগুলো প্লাস্টিক দূষণে বন্ধ হয়ে জলজটের মতো নতুন শব্দ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাভাষায়। এখন প্রয়োজন দিবস পালন শিকেয় তোলে রেখে চোখ বুজে পলিথিনের ব্যাগ তৈরির কারখানাগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া ও যারা পণ্যে প্লাস্টিক মোড়ক না দিয়ে বাজারে পণ্য ছাড়ছে তাদের পণ্য তৈরির ছাড়পত্র বাতিল করে দেওয়া। এমন কঠোর না হলে কোনও কাজ হবে না। পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে হলে অবশ্যই আইন প্রয়োগে কঠোর হতে হবে।