1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বন্ধু হয়ে পাশে থাকার অঙ্গীকার ভারত ও বাংলাদেশের

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে বিশ্বের কাছে দ্বিপক্ষীয় স¤পর্কের ‘মডেল’ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, প্রতিবেশী এ দুই দেশের মধ্যে এখনও যেসব সমস্য আছে, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমেই তার সমাধান হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কণ্ঠেও ঝরেছে একই আশার বাণী।
তিনি বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশ যে বন্ধুত্বপূর্ণ স¤পর্ক নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, পরস্পরের বিকাশে সহযোগিতা করছে তা অন্যদের জন্যও একটি শিক্ষা, একটি উদাহরণ।
শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছেন, তা অর্জনে ভারতের ‘পূর্ণ সমর্থন’ থাকবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মোদী।
শুক্রবার শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এভাবেই দুই দেশের স¤পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় জানান দুই নেতা।
বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধ-শত জন্মবার্ষিকীর উদযাপন ঘিরে বাংলাদেশের অর্থায়নে এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন ‘সম্প্রীতির প্রতীক’ এই ভবনের ফলক উন্মোচন করছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
শেখ হাসিনা তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমাদের এ পার¯পরিক সহযোগিতার পূর্ণ সদ্বব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হব এবং এর ফলে বিশ্ববাসীর সম্মুখে বাংলাদেশ-ভারত স¤পর্ক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল হিসেবে গণ্য হবে বলে আশা করা যায়।”
আর নরেন্দ্র মোদী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশেকে ২০৪১ সালের মধ্যে শিক্ষিত রাষ্ট্র করে তোলার যে লক্ষ্য নিয়েছেন, এ তার দূরদৃষ্টি।… এই লক্ষ্য অর্জনে ভারতের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।”
শেখ হাসিনার পরিকল্পনাকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার ধারাবাহিকতার প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য এক এবং সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর পদ্ধতিও এক। আমাদের দুই দেশের সামনেই জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্কট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এদিকে আমরাও আগামী বছরের মধ্যে ভারতের সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছি।”
নির্বাচনের কয়েক মাস আগে কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল শান্তি নিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবন’ এর উদ্বোধন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেওয়া।
তবে এই সফর ঘিরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলো গত কয়েকদিন ধরেই ঘুরে ফিরে আসছে বিভিন্ন আলোচনায়।
এসব অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি সেসব আলোচনাকে আরও উসকে দিয়েছে, কেননা তার আপত্তিতেই তিস্তা চুক্তি আটকে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “একটা প্রতিবেশী দেশ থাকলে সমস্যাও থাকতে পারে, আমরা কিন্তু সমস্যাগুলো একে একে সমাধান করে ফেলেছি। হয়ত কিছুটা বাকি, আমি সে কথা বলে আমাদের এ চমৎকার অনুষ্ঠান নষ্ট করতে চাই না। কিন্তু আমি আশা করি, যে কোনো সমস্যা আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমেই সমাধান করতে পারব।”
বাংলাদেশের সৃষ্টিলগ্ন থেকে ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতবাসী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের সেই অবদান আমরা কোনো দিন ভুলতে পারি না। আমাদের এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে।”
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ভারতের পার্লামেন্টে একটি অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে গেল, ভারতের প্রত্যেকটা দলের সংসদ সদস্যরা সকলে মিলে, দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে এক হয়ে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিলটি পাস করে দিল।
“অনেক দেশে ছিটমহল বিনিময় নিয়ে যুদ্ধ বেঁধে আছে। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে, ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে, আনন্দঘন পরিবেশে আমরা ছিটমহল বিনিময় করেছি।”
এটা সম্ভব হওয়ায় ভারতের সব পক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হাসিনা বলেন, “সত্যি কথা বলতে কি, আমি এত আবেত আপ্লুত হয়েছিলাম, চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। মনে হল একাত্তর সালে যেভাবে আমরা ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছিলাম, আবার একবার দেখলাম, ঠিকই আমাদের প্রতিবেশী আমাদের বড় বন্ধু, সে বন্ধু তারা পাশে দাঁড়াল…।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শত্রু হল দারিদ্র্য। এ অঞ্চলকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই ভারত ও বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত যথেষ্ট সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
“বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠা করাই আমার দায়িত্ব। আমাদের দুই বাংলার মধ্যে যে স¤পর্ক তা আরও সুন্দর হোক, সেটাই আমরা চাই।”
গত মার্চে দিল্লিতে ভারতের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সৌর জোটের সম্মেলনে অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী।
তিনি বলেন, “আমি খুবই খুশি হয়েছি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সে সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহযোগিতার ইচ্ছা কত প্রবল তা আমি দেখেছি।”
সামাজিক খাতে বাংলাদেশ যে উন্নতি দেখিয়েছে, তা অনুকরণীয় বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার শর্ত পূরণ করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য যেমন গর্বের, ভারতের জন্যও গর্বের। বাংলাদেশ তাদের সামাজিক খাতে যতটা অগ্রগতি করেছে, গরীব মানুষের জীবনযাত্রার সহজ করতে যে কাজ করেছে, আমি স্বীকার করি এটা আমাদের প্রেরণা দিতে পারে।
মোদীর ভাষায়, বাংলাদেশ এবং ভারতের অগ্রযাত্রার সূত্র একটি ‘সুন্দর মালার মত’।
“কিছুদিন ধরে আমাদের সামনে এক ধ্রুব সত্য এসেছে, তা হলো প্রগতি, সমৃদ্ধি, শান্তি ও ঐক্যের জন্য দরকার ভারত এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্ব। পারস্পরিক সহযোগিতা। এই সহযোগিতার বিকাশ কেবল দুই পক্ষের কারণেই হয়েছে তা নয়ম বিমসটেকের মত একটি প্ল্যাটফর্মও আমাদের সহযোগিতা, প্রগতি ও সংযোগকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।”
দুই বাংলার এই মেল-বন্ধনের কথা বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর কাজী নজরুল ইসলামের কথাও শেখ হাসিনা বলেন।
“রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল ইসলাম দুজনেই দুই বাংলার। রবীন্দ্রনাথ আমাদের হৃদয়ে আছেন, হৃদয়েই থাকবেন। এটা বোধহয় ভারতের অনেকে জানেন না, এক সময় বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল, এমনকি রবীন্দ্র সাহিত্য পড়া যাবে না- সে রকম একটা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, যার বিরুদ্ধে আমাদের শিক্ষক, ছাত্রসমাজ সকলে মিলে সংগ্রাম করেছিলেন। আজকে মুক্তভাবে সবকিছুর চর্চা করতে পারে সে রকম একটা পরিবেশ বাংলাদেশে বিরাজমান।”
শেখ হাসিনা বলেন, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক- এরা সব কিছুর ঊর্ধ্বে, তাদের স্থান অনেক উপরে।
“আমরা চাই দুই দেশের শিল্প, সাহিত্য, কলা সব কিছুর আদান-প্রদান হোক। সকলে মিলে মানবজাতির জন্য এক হয়ে কাজ করব।”
সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রসঙ্গও আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
“আপনারা জানেন, ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের মাটিতে আশ্রয় নিয়েছে, মানবিক কারণে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। তারা দ্রুত তাদের স্বদেশে ফিরে যাক- আমরা সেটাই চাই। আমরা কিন্তু নির্যাতিত মানুষকে আশ্রয় না দিয়ে পারি না।”
শেখ হাসিনা ও নরেদ্র মোদী যৌথভাবে বাংলাদেশ ভবনের ফলক উন্মোচন করে ওই ভবনের মিলনায়তনেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত শোনানো হয়।
শেখ হাসিনা জানান, ২০১০ সালে তার ভারত সফরের সময় এ ভবন নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। ওই এলাকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ভবনের নকশা করা হয়।
বাংলাদেশ ভবন নিয়ে উচ্ছ্বসিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার খুব ভালো লেগেছে, এটা দারুণ হয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়ছে বার বার। কারণ ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের স¤পর্ক সেই ১৯৭১ সাল থেকে।”
তিস্তা প্রসঙ্গ দূরে রেখেই মমতা বলেন, “অবিরল-অবিচল, একেবারে পদ্ম-মেঘনা-যমুনার মত, অনেক জল গড়িয়ে গেছে, অনেক জল গড়াবে। কিন্তু দুদেশের স¤পর্ক আরও অনেক অনেক ভালো হবে, এটা আমি বিশ্বাস করি।”
ভারতে কবি নজরুল ইসলামের নামে বিমানবন্দর, একাডেমি, তীর্থ প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গে তুলে ধরে মমতা বলেন, “আমরা বঙ্গবন্ধুর নামেও একটি বঙ্গবন্ধু ভবন করতে চাই যখনই আমাদের সুযোগ দেবেন, আমরা করব।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রচলিত ও অপ্রচলিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে পার¯পরিক সহযোগিতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
“বাংলাদেশ-ভারতের বহুমুখী ও বহুমাত্রিক এ স¤পর্ক বিগত সাড়ে নয় বছরে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন হয়েছে। আমরা আজ দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, উভয় দেশ ভবিষ্যতেও এ সকল সহযোগিতা বিদ্যমান রাখবে।”
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর ছোটবোন শেখ রেহানাসহ ভারতে আশ্রয় নেয়ার কথাও শেখ হাসিনা এ অনুষ্ঠানে বলেন।
তিনি বলেন, দুই দেশর মধ্যে হাজার বছরের অভিন্ন ঐতিহাসিক, সামাজিক, ভাষিক, সাংস্কৃতিক ও আত্মিক বন্ধন বিদ্যমান।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পুরনো স¤পর্কের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমার ইচ্ছে ছিল এখানে বাংলাদেশ বিষয়ে চর্চার জন্য একটি আলাদা জায়গা থাকুক। ২০১০ সালে আমার ভারত সফরের সময় এই ভবনটি স্থাপনের ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত এটি আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে।”
বাংলাদেশ ভবন স্থাপনের সুযোগ দেয়ায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার, ভারত সরকার ও ভারতের বন্ধুপ্রতীম জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর কেশরীনাথ ত্রিপাটি, বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক সবুজ কলি সেনসহ দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।
বাঙালির জীবনে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বেশি কিছু বলার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি শুধু এটুকুই বলব, প্রতিটি বাঙালির জীবনে তিনি উজ্জ্বল বাতিঘর। আমাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ, দ্রোহ ও শান্তিতে রবীন্দ্রনাথ থাকেন হৃদয়ের কাছের মানুষ হয়ে। তার সৃষ্টির ঝর্ণাধারায় আমরা অবগাহন করি প্রতিনিয়ত।”
বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মনেপ্রাণে ধারণ করতেন জানিয়ে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি রবীন্দ্রনাথের দ্বারা এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত করে রেখেছিলেন।”
তিনি বলেন, ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবার্ষিকীতে তার সাহিত্য ও গানকে নিষিদ্ধ করার অপচেষ্টা নিয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এই ভূখ-ের মানুষ। সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষ রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেছে হৃদয়ে, চেতনায় ও বিশ্বাসে।
“আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রবীন্দ্রসংগীত আমাদের দিয়েছে প্রেরণা, যুগিয়েছে উৎসাহ ও সাহস।”
বাংলাদেশের অর্থায়নে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাংলাদেশ ভবনে গবেষকদের সহায়তার জন্য পাঠাগার, অডিটোরিয়াম, ক্যাফেটারিয়া, ডিজিটাল জাদুঘর ও আর্কাইভ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে।
এই ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ এবং এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ১০ কোটি রুপির একটি স্থায়ী তহবিল গঠন করার ঘোষণা দেন অনুষ্ঠানে।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি, কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে এটি (বাংলাদেশ ভবন) একখ- বাংলাদেশ, যাকে কেন্দ্র করে শান্তিনিকেতনের বুকে জেগে উঠবে বাংলাদেশের আলো, যে আলো রবীন্দ্রময় নিশ্চয়ই, তবু তার মধ্যে আছে স্বকীয়তা।”
বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন শেষে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন শেখ হাসিনা। বিকালে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শনে যাবেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com