1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

খাসিয়ামারা নদী : অবাধে চলছে বালু উত্তোলন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮


মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী ::

দোয়ারাবাজারের খাসিয়ামারা নদী হতে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। অপরিকল্পিতভাবে উপজেলার পাহাড়ি এই নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু ও নুড়ি উত্তোলনের ফলে নদীর দুই পাড়ের ভাঙন এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষ্মীপুর ও সুরমা এই দুই ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ওই নদীটি সুরমায় মিলিত হয়েছে। পাহাড়ি নদী হওয়ায় বছরের অর্ধেক সময় শুকনো এবং বাকি অর্ধেক সময় বহমান ¯্রােত থাকে খাসিয়ামারায়। বর্ষা মৌসুমে নদীর ¯্রােত ভারত থেকে নিয়ে আসে প্রচুর বালু, নুড়ি ও পলিমাটি। একটি মহল ব্যবসায়িক ফায়দা লুটতে অবাধে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে নদীর স্বাভাবিক গতিধারা বিনষ্ট করায় সম্প্রতি নদীর দুই তীরে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, খাসিয়ামারা নদীতে থেকে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করে তা প্রায় অর্ধশতাধিক স্টিলবডি নৌকায় বোঝাই করা হয়। এসব বালুবোঝাই স্টিলবডি সুরমা নদীর মুখে জড়ো হয়। পরে এখান থেকে ১০০ টাকা ফুটেরও অধিক দামে জেলা সদরের বাইরে বিক্রি করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
উপজেলার সুরমা ইউনিয়েনের আলীপুর বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া বলেন, আমাদের স্থানীয়দের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা না করে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নদী ভাঙনে আমরা অনেক সম্পদ হারিয়েছি। এখন আমার জীবিকার শেষ সম্বল একমাত্র দোকানটিও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। অবিলম্বে খাসিয়ামারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।
একই গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিন বলেন, আমার অর্ধেক ফসলি জমি খাসিয়ামারা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই কয়েক বছর বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন বেড়ে গেছে। বাকি জমিটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
নদী পাড়ের বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, আমার বসতবাড়ির উঠান এখন নদীগর্ভে আছে। নদীগর্ভে জমিজমা, বসতবাড়ি হারিয়েও আমরা কোনো ধরনের সহায়তা পাইনি। উল্টো বালু উত্তোলনের নামে আমাদের সর্বনাশ করা হচ্ছে। শুনেছি সরকার নাকি লিজ দিয়েছে। আমরা কার কাছে অভিযোগ করবো?
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির বলেন, অবাধে বালু উত্তোলন করায় নদীপাড়ের বাজার, ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। এতে নদীর পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার বলেন, অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে একদিকে যেমন পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে খাসিয়ামারা নদী বিধৌত সুরমা ইউনিয়নের টিলাগাঁও, গিরিশনগর, আলীপুর, টেংরাটিলা, নূরপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা নদী ভাঙনের কবলে রয়েছেন। অবিলম্বে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মামুনুর রশীদ বলেন, বালু মহাল লিজ দেওয়া হয়েছে। নদীর দুই পাড় কেটে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করলে নদী ভাঙনের সম্ভাবনা থাকে। তবে স্থানীয়রা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজ বলেন, খাসিয়ামারা নদীতে একটি বালু মহাল ঘোষণা আছে। এটি জেলা প্রশাসন কর্তৃক সম্প্রতি ইজারা দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাদের কাছে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি এসেছে। অবিলম্বে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com