1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

‘৬ কারণে’ প্রশ্ন ফাঁস

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
তিন মন্ত্রী ও ছয় সচিবের বৈঠকে প্রশ্ন ফাঁসের ছয়টি কারণ চিহ্নিত হয়েছে।
প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে করণীয় নির্ধারণে মঙ্গলবার বিকেলে দুজন মন্ত্রী এবং ছয়জন সচিবকে নিয়ে সচিবালয়ে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সভায় অংশ নেন।
চলতি এসএসসি পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর আগেই ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর অভিযোগ যাচাইয়ে একটি কমিটি করে সরকার।
মঙ্গলবারের সভায় উপস্থিত সচিব আলমগীর নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানানোর পরদিনই শিক্ষামন্ত্রী এই সভা ডাকলেন।
‘পাবলিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে’ অনুষ্ঠিত এই সভার কার্যপত্রে প্রশ্ন ফাঁসের জন্য ছয়টি কারণকে চিহ্নিত করা হয়। যে কারণগুলো চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়- বিজি প্রেসে প্রশ্ন ক¤েপাজ এডিট, প্রিন্ট ও প্যাকেজিং পর্যায়ে প্রায় ২৫০ জনের মতে কর্মী প্রশ্ন দেখতে পারে। তারা প্রশ্ন কপি করতে না পারলেও তার স্মৃতিতে ধারণ করা অসম্ভব ব্যাপার নয়। ৩/৪ জনের একটি পুরো গ্রুপের পক্ষে এভাবে প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব হতে পারে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে ট্রেজারি বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে প্রশ্ন গ্রহণ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অনেক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না মর্মে অভিযোগ রয়েছে। অতিরিক্ত কেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার ব্যবস্থাপনা করার মতো পর্যাপ্ত জনবল নেই। তাছাড়া ভেন্যুগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল কেন্দ্র থেকে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত। ফলে ৩০ মিনিট সময়ের অধিক পূর্বে কেন্দ্র সচিবরা প্রশ্ন খুলতে বাধ্য হচ্ছেন। পরীক্ষার্থী কিংবা পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। গুটিকয়েক শিক্ষক-কর্মচারীর কারণে গোটা প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীরা তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। এটা পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্ব হতে করা সম্ভব হলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার লোকবল, অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত স্বল্পতার কারণে কাক্সিক্ষত মাত্রায় নজরদাবি করা সম্ভব হচ্ছে না মর্মে প্রতীয়মান হয়। দুষ্কৃতকারীদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার ও শাস্তির প্রদান করতে না পারায় অন্যরাও অপরাধ করতে ভয় পাচ্ছে না। বিটিআরসি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের চিহ্নিত করতে দেখা যাচ্ছে না এবং সন্দেহজনক একাউন্ট বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
গত বছর ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর এ বছর ‘অধিক সতর্কতা’ অবলম্বন করেও সফল হওয়া যায়নি বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য।
সভার কার্যপত্রে বলা হয়, ডাকঘর ও রেলপথে প্রশ্নপত্র পৌঁছানোসহ বিভিন্ন কাজে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ সংস্থা জড়িত। ফলে সুষ্ঠুভাবে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সহযোগিতা প্রয়োজন।
সভা শুরুর কিছু সময় পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “যত রকমের সহযোগিতা প্রয়োজন, তা করব।”
সভায় কী সিদ্ধান্ত হল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় সভা ডাকছে উনারা বলবেন।”
সভা শেষে সাংবাদিকদের বার বার অনুরোধের পরও শিক্ষামন্ত্রী মুখ খোলেননি।
পরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, পুরো হাইয়েস্ট লেভেল বসেছি। যেসব মন্ত্রণালয় পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের মন্ত্রী, সচিব এবং উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং আরও কিছু করার আছে কি না সে বিষয়ে পর্যালোচনা হয়েছে, বিভিন্ন পরামর্শ পেয়েছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য এই পরীক্ষা (এসএসসি) শেষ করা। আপনারা দেখছেন গত পরশু থেকে (এসএসসি পরীক্ষা) মোটামুটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসছে পরিস্থিতি। আমরা আশা করছি যে বাকিগুলোও আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
সময় স্বল্পতার কারণে আসন্ন এইচএসসিতে নতুন কোনো পদ্ধতিতে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান সচিব।
“(এসএসসিতে) যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেগুলো অব্যাহত থাকবে। পরীক্ষার ত্রিসীমানার মধ্যে যদি কারও হাতে মোবাইল ফোন থাকে, তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যে কারও মোবাইলে, যে কোনো জায়গায় যদি কেউ ধরে দিতে পারেন আমরা
সেটিকে আইনের আওতায় আনব, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
আগামীতে পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার কথা জানিয়ে সচিব বলেন, প্রশ্ন ব্যাংক তৈরি করে পরীক্ষার দিন প্রশ্নপত্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।
আগামী বছরের এসএসসি থেকে নতুন পদ্ধতি কার্যকরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভায় সকলেই প্রশ্ন ব্যাংক তৈরির বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন জানিয়ে সচিব সোহরাব বলেন, পরীক্ষার দিনে সকালে পরীক্ষার রুমে কোনো ডিভাইজের মাধ্যমে প্রশ্ন দেওয়া যায় কি না সে বিষয়েও ভাবা হচ্ছে।
“এমন কোনো পথ আবিষ্কার করা প্রয়োজন যেখানে প্রশ্ন ছাপাও হবে না, বিতরণও হবে না, ফাঁসেরও প্রশ্ন আসবে না।”
এসএসসির প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ১৫২ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, অভিযান চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
প্রধানমন্ত্রী এমসিকিউ বন্ধের বিষয়ে বলেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, “আমি মনে করে সেটি নির্দেশ, তবে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বন্ধ করতে হবে সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে আসতে হবে।”
সচিব বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি যাচাই করতে একটি কমিটি কাজ করছে, তারা সুপারিশ করবে। তারা সুপারিশ করার পরে আমরা প্রশাসনিকভাবে সিদ্ধান্তটি নিতে চাই। কারণ এতে অনেক কিছুর ইনভলবমেন্ট আছে, ২০ লাখ ছাত্র-ছাত্রী, তাদের অভিভাবকদের ব্যাপার আছে। সেটি আপনারাও চিন্তা করুন। অত্যন্ত সুচিন্তিত এবং বেশি গ্রহণযোগ্য, সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য কোনো পথ আমাদের বের করতে হবে। তবে সেই কমিটি তারা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবেন, সুপারিশ করবেন, সেই সুপারিশের আলোই পরবর্তী ব্যবস্থা হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com