1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

এলো ঈদুল আজহা : আবু মালিহা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৭

ঈদ মানেই আনন্দ। তাই শিশু-কিশোর যুবা-বৃদ্ধসহ সকল মনেই আনন্দের ফল্গুধারা বইয়ে চলে ঈদের দিনে। ঈদ আসে সত্য ও সুন্দরের জয়গান নিয়ে। প্রতিটি মুসলিম হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে অফুরন্ত প্রেম-প্রীতির বন্ধনে নবজাগরণ। নতুন সুর বীণায় ছন্দময় করে তোলে প্রতিটি প্রান্তর এবং প্রতিটি জনপদে। মানব কল্যাণের সব ধরনের উচ্ছ্বাস জাগিয়ে দেয় নবচেতনায় এবং নতুন মাত্রায়। তাই ঈদুল আজহার দিনে মানুষের সেই চেতনারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে নবউদ্যমে। এ দিনটি হলো কোরবানির দিন। কী কোরবানি করতে হয়। সাধারণত পশু কোরবানির মাধ্যমে ত্যাগ-তীতিক্ষার শিক্ষা নিয়ে আসে মানুষের জন্য। অন্তরের সমস্ত কুপ্রবৃত্তির লালসা ও জঘন্য মনোবৃত্তির কোরবানি দিয়েই মানব কল্যাণের জাগ্রতি ঘটাতে চায়।
হযরত ইব্রাহীম (আ.) আত্মত্যাগের সেই ঐতিহাসিক শিক্ষাকেই বুলন্দ করার জন্য প্রতি বৎসর তাই আমাদের সামনে আসে পবিত্র ঈদুল আজহা। মানুষের পশুত্ব মানবিকতার উদ্যত ও অহমিকার মূলোৎপাটন করতেই মূলতঃ ঈদুল আজহার শিক্ষা নিয়ে আসে মুসলিম জাহানে।
মানবতার কল্যাণ সাধনে ইসলাম যে ক’টি শিক্ষা মানুষের সামনে তুলে ধরে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঈদুল আজহার শিক্ষা অর্থাৎ পবিত্র এদিনে পশু কোরবানি দিয়ে মানব মনের সমস্ত পশু প্রবৃত্তির মূলোৎপাটন এবং আত্মশুদ্ধি ও মানবিক কল্যাণ চেতনাকে শানিত করার এটি একটি জ্বলন্ত শিক্ষা। আর এতে নব জাগৃতি এবং নবশক্তির উদ্বোধন ঘটায় প্রতিটি মুসলিম অন্তরে। তাই জাতীয় কবির ভাষায় “ওরে হত্যা নয় আজ/ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন”। সত্যিই সকল অশুভ শক্তির দমন করতে নব শক্তির চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাজ্ব্যল্যমান হয়ে সত্য ও সুন্দরের নব সূর্যালোকের মত প্রজ্বলন শাশ্বত ও চিরন্তন মানব ধর্মের চেতনা উপলব্ধি হোক গোটা মানবতায়।
আমাদের সমাজে নানা ধরনের জাহেলিয়াত নবরূপে দেখা দিয়েছে। এতে মানুষ প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে নানা পৌরানিক কাহিনী ও আদিম প্রচলিত কুসংস্কারের বহু বিষয়ই নবসংস্করণে আজ আমাদের সামনে নতুন আঙ্গিকে প্রতিভাত হতে দেখা যায়। যা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও দর্শনের স¤পূর্ণ বিপরীত। এতে ভেদ-বুদ্ধির পার্থক্য অনুযায়ী একেক স্থানে একেক রকম রসম রেওয়াজ চালু করার মাধ্যমে সেগুলো প্রচলন শুরু হয়েছে। যা অনেক ক্ষেত্রে শিরক পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। সচেতন মহল এবং ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ ব্যক্তিগণ ও ফেকাহবিদগণ যদিও এ ব্যাপারে প্রায়ই সচেতন করে তুলছেন, তবুও এ ব্যাপারে সাধারণ জনগণ (যারা ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ নয়) খুব একটা আমলে নিচ্ছে না। হুজুগ এবং আবেগ অনেক ক্ষেত্রেই অতিভক্তির ছদ্মাবরণে লোকজন তাদের বিভ্রান্ত করে চলেছে। যাদের আসল লক্ষ্যই থাকে আর্থিক সুবিধা হাসিল। আমরা এ সমস্ত কু-চক্রী মহলের ধর্মের নামে নানা অপকর্ম বা অধর্ম আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রকৃত অর্থে ইসলামের নৈতিক শিক্ষায় জনগণকে প্রশিক্ষিত করতে পারলেই এ ধরনের বহু কুসংস্কার সমাজ থেকে উৎপাটিত হবে বলে বিশ্বাস করি। প্রথমেই বিষয়টি আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, তাহলো কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে প্রতিটি ঈমানদারদেরকে ইসলামী শিক্ষায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। পাড়া, মহল্লায় এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।
মানুষকে হালাল, হারাম, জায়েজ-নাজায়েজ এবং ফরয-ওয়াজিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান-শিক্ষা প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষের মনের দুয়ারকে উন্মুক্ত করে দিতে হবে ঐশী আলোর দিকে এবং এতে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে সম্যক জ্ঞান দেবার মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে।
কোরবানির মূল শিক্ষাই হচ্ছে- মানবতার জয়গান গাওয়া, মানবতার কল্যাণে ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে আত্ম্যোৎসর্গ করা। বিশেষ করে ¯্রষ্টার সৃষ্টির প্রতি চরম ইনসাফের বার্তা বহন করে সেই অনুযায়ী সকল জাহেলিয়াতের মূলোৎপাটন করে সত্য ন্যায় এবং ইনসাফের সাম্য মৈত্রীর পরিবেশ সৃষ্টি করে এ পৃথিবীর বুকেই বেহেস্ত রচনা করা। যাতে অধর্ম ও কুসংস্কারের প্রেতাত্মাদের খতম করে মানবতাবোধ উজ্জীবিত হয়ে জাগতিক কল্যাণের সকল ক্ষেত্রে ঐশী প্রেমের পবিত্র পরিবেশ জাগরিত করা। যা হবে ¯্রষ্টার চিরকল্যাণময় নীতিমালার জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষার চরম বাস্তবায়নে নিজেদের ব্যাপৃত করা এবং বিশ্বব্যাপী মানবতাবোধের নৈতিক বিকাশের মাধ্যমে সত্যিকার কল্যাণ জগত প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ হওয়া। সবচেয়ে বড় কথা মানব মনের পশু প্রবৃত্তিকে যদি উৎখাত করতে পারি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সকল ধরনের ত্যাগ এবং কোরবানি করে
নিজেদের আত্মশুদ্ধি জাগাতে পারি তবেই হবে ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা।
অতএব, আসুন ঈদুল আজহার দিনে প্রকৃত ঈদের খুশি নিয়ে মানবতার কল্যাণে যা পবিত্র কুরআনে ঘোষিত হয়েছে- ‘কুল ইন্নাসালাতি ওয়ানুছুকি ওয়া মাহইয়া ইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলা আমীন’ অর্থাৎ বলো আমার নামায, আমার ইবাদতের সমস্ত অনুষ্ঠান, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছুই জগৎ সমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। (সূরা-আন’আম-আয়াত-১৬২)। সবাইকে জানাই ঈদ মোবারক আসসালাম।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com