1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

আমার সাংবাদিক জীবনের এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের বিশালত্ব ও মহানুভবতা : হোসেন তওফিক চৌধুরী

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭

ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির মহাজাগৃতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ ১৫ই আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। একদল পথভ্রষ্ট বিপথগামী গোষ্ঠী ১৯৭৫ সালের এইদিনে তাঁকে নিষ্ঠুরভাবে প্রায় সপরিবারে হত্যা করে ইতিহাসে এক মর্মান্তিক কালো অধ্যায়ের সূচনা করে।
বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়েছেন। ইতিহাসে জীবন্ত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মরহুম বঙ্গবন্ধু অনেক অনেক শক্তিশালী। শ্রদ্ধা-ভালবাসায় শুধু আমাদের দেশেই নয় সারা বিশ্বের মানুষের মনের মন্দিরে, অন্তরের অন্তঃস্থলে তাঁর অবস্থান।
এই মহান পুরুষের সঙ্গে আমার জীবনের এক টুকরো স্মৃতি আছে। এই স্মৃতিটা অমলিন। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে, অনেক পটপরিবর্তন হয়েছে, দৃশ্যপট বদলেছে, কিন্তু আমার মনে জাগরুক রয়েছে সেই স্মৃতি। আজ তা বারবার মানস নয়নে ভেসে উঠছে।
বঙ্গবন্ধু এক বিশাল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন। তাঁর হৃদয়ের বিশালত্ব বর্ণনা করা সম্ভব নয়। কিউবা’র নেতা ফিদেল কাস্ত্রো তাঁর হৃদয়ের বিশালত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি হিমালয় পর্বত দেখিনি। দেখেছি বঙ্গবন্ধুকে।’ এই মন্তব্য থেকেই তাঁর হৃদয়ের বিশালত্ব এবং বিশ্বে নেতৃবৃন্দের মধ্যে তাঁর অবস্থান নিশ্চিত করা যায়।
১৯৭৪ সাল। আমি তখন ঢাকায় অধুনালুপ্ত ‘দৈনিক পূর্বদেশ’-এর সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার। দেশে তখন আকস্মিক লবণ সংকট দেখা দেয়। আমাকে অফিস থেকে লবণ সংকট নিয়ে রিপোর্ট করার এসাইনমেন্ট দেয়া হয়। বিভিন্ন সূত্র ঘাটাঘাটি করে আমি ‘লবণ সংকটের নেপথ্য কাহিনী’ নিয়ে রিপোর্ট করলাম। তখন খাদ্যমন্ত্রী ফনিভূষণ মজুমদার, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দীন ঠাকুর এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আব্দুল তোয়াব খান রিপোর্ট প্রকাশের পর ক্ষেপে গেলেন। সাথে সাথেই তারা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মীর নূরুল ইসলাম ও আমার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সম্পাদক এহতেশাম হায়দার চৌধুরীকে নির্দেশ দিলেন। আমাকে ও বার্তা সম্পাদককে কোন কারণদর্শানোর সুযোগ না দিয়েই বরখাস্ত করা হয়।
আমাদের বরখাস্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই সাংবাদিকমহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হল। সাংবাদিক নেতা শ্রী নির্মল সেন, কামাল লোহানী, আলী আশরাফ, রিয়াজ উদ্দিন আহমদ, ইকবাল সোবহান চৌধুরী আমাদের বরখাস্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদেরকে পূর্বপদে পুনর্বহালের দাবি জানান। বিভিন্ন পত্রিকার ইউনিটসমূহ এর প্রতিবাদ জানিয়ে সভা হতে শুরু হল। যুবলীগের প্রধান ও দৈনিক বাংলার বাণী’র সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মনি তার পত্রিকায় সাংবাদিক বরখাস্তের প্রতিবাদ এবং সাংবাদিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানান।
সাংবাদিক বরখাস্তের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু অবহিত ছিলেন না। তাঁর অগোচরেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে বঙ্গবন্ধু সব শুনলেন। বললেন, সিদ্ধান্তটা সঠিক হয়নি। আব্দুল তোয়াব খানকে বললেন, সাংবাদিকদের গণভবনে বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করার জন্যে। তোয়াব খান সম্পাদক এহতেশাম হায়দার চৌধুরীকে বিষয়টি জানালেন। হায়দার সাহেব আমাদের সাথে যোগাযোগ করলেন। আমরা সাংবাদিক নেতাদের এ ব্যাপারে অবহিত করলাম। তাদের পরামর্শ নিয়ে আমরা হায়দার সাহেবকে সাথে নিয়ে গণভবনে গেলাম। আমাদের ভয় ছিল বঙ্গবন্ধু হয়তো আমাদেরকে কড়া কথা বলবেন। কিন্তু কোথায়? বঙ্গবন্ধু হাসিমুখেই আমাদেরকে গ্রহণ করলেন। সাংবাদিকতা সম্পর্কে কিছু আলাপের পর বললেনÑ যাও অফিসে কাজে যোগদান করো। সাংবাদিক নেতাদের অবহিত করে আমরা পুনরায় কাজে যোগ দিলাম।
বঙ্গবন্ধু আমাদের সাথে এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করবেন এটা ছিল আমাদের কল্পনার বাইরে। তাঁর এই মহানুভব আচরণে আমরা অভিভূত হলাম। এ ধরনের আচরণ একমাত্র বঙ্গবন্ধুর দ্বারাই সম্ভব।
এই স্মৃতি কি কখনো ভুলা যায়? আমি তো ভুলিনি। বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ এবং চাকরি ফিরে পাওয়ার স্মৃতি আমার কাছে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে।
[লেখক : আইনজীবী-কলামিস্ট]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com