সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
যা আভাস মিলছিল তা-ই হলো। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের চতুর্দশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন রামনাথ কোবিন্দ। ক্ষমতাসীন বিজেপি জোট থেকে মনোনয়ন নিয়ে বিপুল ভোটে জিতে গেছেন দলিত সম্প্রদায়ের এ নেতা। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিরোধী কংগ্রেস জোটের প্রার্থী লোকসভার সাবেক স্পিকার মীরা কুমার।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার কিছুক্ষণ আগে রামনাথকে রাষ্ট্রপতি পদে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানায়, নির্বাচনে গৃহীত মোট ভোটের প্রায় ৬৬ শতাংশ পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন এ দলিত নেতা। এবারের নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ৯৯ শতাংশ ভোট পড়ে।
গত সোমবার অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে। ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই দফায় দফায় প্রাপ্ত ফলাফলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকছিলেন রামনাথ। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত ফলাফলে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়েই জিতে গেলেন তিনি।
নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন লোকসভা ও বিধানসভার মোট ৪ হাজার ৮৯৬ সদস্য। এদের মধ্যে ৭৭৬ জন লোকসভা ও ৪ হাজার ১২০ জন বিধানসভার সদস্য। কেন্দ্রীয় সংসদ লোকসভা ও রাজ্যের সংসদ বিধানসভাগুলোতে বিজেপি জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় পর্যবেক্ষকরা রামনাথকেই শুরু থেকে এগিয়ে রাখছিলেন।
৭১ বছর বয়সী রামনাথ জন্মেছিলেন উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা তীরবর্তী কানপুরের পারাউখ গ্রামে এক কৃষক পরিবারে, ১৯৪৫ সালের ১ অক্টোবর। কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হওয়ার পর আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। ১৬ বছর দিল্লি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পর ১৯৯৪ সালে তিনি বিজেপি প্রার্থী হিসেবে উত্তর প্রদেশ থেকে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সদস্য মনোনীত হন। এরপর একই দল থেকে টানা দু’বার লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বিজেপির দলিত মোর্চার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রামনাথ। সর্বভারতীয় কোলি-সমাজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা রামনাথ জাতিসংঘেও ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট তাকে বিহারের রাজ্যপাল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
রামনাথকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নির্বাচনের মাঠে প্রথমেই ‘মাস্টার স্ট্রোক’ খেলে দেন বলে জানায় সংবাদমাধ্যম। দলিত সম্প্রদায় থেকে বিজেপি যে প্রার্থী নিতে চলেছে, তার আভাস মিলছিল অনেক কাছ থেকে। আগামী ২৫ জুলাই মেয়াদ শেষে প্রণব মুখার্জী বিদায় নিলে সেদিন শপথ নিয়ে কোবিন্দ উঠে যাবেন রাইসিনা হিলের ‘রাষ্ট্রপতি ভবনে’।