1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

পবিত্র শবে বরাত : করণীয় ও বর্জনীয় : মাও. কাজী আমীন আত তাফহীম

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০১৭

শবে বরাত ফার্সি শব্দ, বাংলাতে আমরা বলি ভাগ্য রজনী। হাদিসের পরিভাষায় তাকে বলে লাইলাতুন নিছফে মিন শাবান বা শাবান মাসের অর্ধেক রজনী। বিশেষ এ রাতে আল্লাহ তা’লা আগামী এক বছরের জন্য মানুষের রিজিক জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি বিষয় নির্ধারণ করে থাকেন। পবিত্র হাদিস শরিফে এ রাত সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে। হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, যখন শাবান মাসের অর্ধেক রজনী (শবে বরাত) আসে, তখন তোমরা রাতে নামাজ পড়, আর দিনের বেলা রোজা রাখ। নিশ্চয়ই আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডোবার সাথে সাথে পৃথিবীর আকাশে এসে বলেন, কোন গুনাহ ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। কোন রিজিক প্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দিব। কোন বিপদগ্রস্ত আছে কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করে দিব। আছে কি, এমন? আছে কি তেমন? এমন বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত। [ইবনে মাজাহ ১৩৮৮]
এ রাতে এত অধিক পরিমাণে পাপীদেরকে মাফ করা হয় যা হযরত আয়েশা (রা.) হাদিস থেকে জানতে পারি, তিনি বলেনÑ আমি এক রাতে রাসুল (সা.)-কে না পেয়ে খুঁজতে বের হলাম। জান্নাতুল বাকীতে [মদীনার কবরস্থান] গিয়ে আমি তাকে দেখতে পেলাম। তিনি বলেন, কী ব্যাপার আয়েশা? (তুমি যে তালাশে বের হলে) তোমার কি মনে হয় আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) তোমার প্রতি অবিচার করবেন? আয়েশা (রা.) বললেনÑ আমার ধারণা হয়েছিল আপনি অন্য কোন বিবির ঘরে গিয়েছেন। রাসুল (সা.) বললেনÑ যখন মাসের ১৫ই রাত আসে (শবে বরাত) তখন আল্লাহ পাক ১ম আসমানে নেমে আসেন। তারপর বনু কালব গোত্রের বকরীর পশমের চেয়েও বেশি সংখ্যক বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। (তিরমিযী শরীফ) হাদীস নং ৭৩৯।
এ রাতে আল্লাহ বেশ কিছু মানুষকে ক্ষমা করেন না খাঁটি অন্তরে তওবা না করা পর্যন্ত। তারা হল মুশরিক, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, জালিম শাসক, হত্যাকারী, মদ পানকারী, নিন্দাকারী, গনক, সুদদাতা ও গ্রহীতা, ঘুষদাতা ও গ্রহীতা, সন্ত্রাস ও ফাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে আল্লাহ মাফ করেন না।
যে পাঁচটি রাতের বিশেষভাবে দোয়া কবুল হওয়ার ওয়াদা করা হয়েছে তার মধ্যে শবে বরাতের রাত একটি। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, নিশ্চয়ই পাঁচ রাত্রিতে নিশ্চিতভাবে দোয়া কবুল হয়ে থাকে। ১. রজব মাসের প্রথম রাতে, ২. শবে বরাতের রাতে, ৩. কদরের রাতে, ৪. ঈদুল ফিতরের রাতে ও ৫. ঈদুল আযহার রাতে। (সূত্র : মাসাবাতা-বিসসুন্নাহ)
কোন বর্ণনায় পাওয়া যায় রজব মাসে ইবাদতের বীজ বপন কর, শাবান মাসে পানি দাও এবং রমজানে এর ফসল কাটো। আগে থেকেই নেক আমলের সাধনা করলে রমজানে কৃতকার্য হওয়া যায়।
শবে বরাতের করণীয়
রাসুল (সা.) এর হাদীস শরীফ থেকে জানা যায়, শবে বরাতের উপলক্ষে প্রধান করণীয় দুটি। এক. রাত জেগে ইবাদত করা। যেমন : নফল নামাজ, কোরআন তেলায়াত, তসবীহ তাহলীল, দরুদ ও দোয়া, তওবা, এস্তেগফার ও কবর জিয়ারত করা। দুই. পর দিন রোজা রাখা।
হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-কে আমি কখনও শাবান মাসের চেয়ে বেশি (নফল) রোজা রাখতে দেখি নাই। (বুখারী শরীফ)
শবে বরাতের বর্জনীয়Ñ
এবাদতের এ রাতে আতশবাজি করে এবাদতের সময় নষ্ট করা উচিত নয়। এ রকম আনন্দ উৎসব নেহায়েত বোকামী। অনাকাক্ষিত লৌকিকতা, উন্মত্ততা উৎসব প্রবণতায় শবে বরাতের প্রকৃত আবেদন ও পবিত্রতা নষ্ট হয় বিধায় আমাদের বর্জন করা উচিত। অতিরিক্ত ভোজ শরীরকে ক্লান্ত করে ইবাদতে বিঘœ ঘটে।
যারা এ রাত পেল অথচ রাতের সদ্ব্যবহার করতে পারল না তাদের চেয়ে বদনসিব কেউ হতে পারে না। সুতরাং এ রাতে সঠিক নিয়মে আমল ও পালন করলেই কেবল এ রাতের বরকত ও ফজিলত লাভ করা যাবে।
আল্লাহ পাক সকল মুমিন মুসলমান নর-নারীকে পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত ও বরকত দান করুন, আমিন।
(লেখক : আরবী প্রভাষক, মেরুয়াখলা মমিনিয়া ফাজিল মাদরাসা, বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ।)

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com