সাইফ উল্লাহ ::
জামালগঞ্জ উপজেলার চার ইউনিয়নে আগামী ৪জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আ.লীগের দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে নানা নাটকীয়তায় ফেনারবাঁক ইউপি নির্বাচন উপজেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আ.লীগের প্রার্থী হিসেবে সাধন চন্দ্র তালুকদারকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হলেও, পরে তাঁকে বাদ দিয়ে করুণাসিন্ধু তালুকদারকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এ নিয়ে উপজেলার রাজনীতি সচেতন মানুষের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, আ.লীগের মনোনয়ন নিয়ে ফেনারবাঁক ইউনিয়নে বেশ কয়েক দফা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ভোটাভুটি হয়। প্রথমবার তৃণমূলের ভোটে সাধন চন্দ্র তালুকদার সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে দলীয় মনোনয়নের জন্য নির্বাচিত হন। এর ক’দিন পরই দ্বিতীয়বার ভোটে নির্বাচিত হন মো. নুরু মিয়া। অপরদিকে, মনোনয়ন পেতে করুনা সিন্ধু তালুকদার শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জোর লবিং অব্যাহত রাখেন। এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে উপজেলা আ.লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে মতদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লবিং চালিয়ে যান। দৌড়ঝাঁপের পর সাধন চন্দ্র তালুকদারকে আ.লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। ঢাকা থেকে মনোনয়ন নিয়ে জামালগঞ্জ আসার পথে কেন্দ্রীয় এক নেতার ফোনে সাধন চন্দ্র তালুকদারকে দলীয় মনোনয়নপত্রটি ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। সাধন চন্দ্র তালুকদারের পরিবর্তে করুণা সিন্ধু তালুকদারকে মনোনয়ন দেয়ায় চরম হতাশ হন সাধন চন্দ্র তালুকদারে কর্মী ও সমর্থকরা।
এদিকে এই ইউনিয়নে করুণাসিন্ধু তালুকদারকে চ্যালেঞ্জ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত সাধন চন্দ্র তালুকদার, মতিউর রহমান (সদ্যসাবেক চেয়ারম্যান), মো. নুরু মিয়াসহ চার জন প্রার্থী বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদ্রোহীদের চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন করুণা সিন্ধু তালুকদার। এ জন্য বিদ্রোহীঘেরা আওয়ামী লীগ প্রার্থী করুণা সিন্ধু তালুকদারকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে বেগ পেতে হবে।
আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাধন চন্দ্র তালুকদার বলেন, তৃণমূলে আমাকে নির্বাচিত করার পর দলীয় কার্ড আমিই পেয়েছিলাম। হঠাৎ কেন্দ্রীয় একজন নেতার ফোনে কার্ডটি ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। কিছুক্ষণ পর শুনি যিনি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ভোটেই আসেননি সেই করুণাসিন্ধু তালুকদারকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমি অসংখ্য নেতাকর্মীদের চাপে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছি।
আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নুরু মিয়া বলেন, তৃণমূলের ভোটে আমি নির্বাচিত হয়েছি। দলীয় কার্ড পাওয়ার কথা আমার। যিনি এলাকায় নেই তাকে কিভাবে কার্ড দেয়া হল? আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছি।
অপর বিদ্রোহীপ্রার্থী মতিউর রহমান বলেন, দলীয় সকল কাজে আমি-আর কার্ড পান অন্যজন। এ কি করে সম্ভব? তাই স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করছি।
এ বিষয়ে জানতে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী করুণা সিন্ধু তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।