স্টাফ রিপোর্টার ::
ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানার চামরদানি ইউনিয়নের রামদিঘা গ্রামে বিদ্যুৎ¯পৃষ্টে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে চার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
ধর্মপাশায় পল্লী বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনে ত্রুটি, অনিয়ম এবং মানুষের জীবন রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে এ রুলে। বিদ্যুৎ সচিব, পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের চেয়ারম্যান, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পল্লী বিদ্যুতের নেত্রকোনা জোনের জেনারেল ম্যানেজার ও মধ্যনগর থানার ওসিকে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অমিত দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণের রুল ছাড়াও বিদ্যুৎ সংযোগে অনিয়ম, ত্রুটি ও মানুষের জীবন রক্ষায় ব্যর্থতার কারণে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না ও নিরাপদ বিদ্যুৎ লাইন সংরক্ষণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নেত্রকোনা জোনের জেনারেল ম্যানেজার ও মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে আটটার দিকে ধর্মপাশা উপজেলার চামরদানি ইউনিয়নের রামদিঘা গ্রামে বিদ্যুৎ¯পৃষ্টে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎ¯পৃষ্টে নিহত রঞ্জিত চন্দ্র সরকারের ছোট ভাই রিপন চন্দ্র সরকার গত ২ মে সোমবার বাদী হয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন কাজে জড়িত অজ্ঞাতনামা ঠিকাদার ও কর্মচারীদেরকে আসামি করে মধ্যনগর থানায় মামলা করেন।
এলাকাবাসী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চামরদানি ইউনিয়নের রামদিঘা গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেওয়া হয়। ওই গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ স্থাপন কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও কর্মচারীদের সীমাহীন গাফিলতি ও অবহেলা ছিল। তারা তাদের ইচ্ছেমতো এই কাজ
করেছেন। ঘটনার দিন রামদিঘা গ্রামের কৃষক রঞ্জিত চন্দ্র সরকার নিজ ঘরের সামনের উঠোনে দাঁড়িয়ে মুড়ি খাচ্ছিলেন। এ সময় উঠানের ওপর দিয়ে টানানো পল্লী বিদ্যুতের তার রঞ্জিতের গায়ের ওপর ছিঁড়ে পড়ে। এতে তিনি বিদ্যুৎ¯পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাকে বাঁচাতে তার স্ত্রী রিতা সরকার (৩৫), বাবা জগদীশ চন্দ্র সরকার (৭০) ও বড় ভাই রাকেশ চন্দ্র সরকারের মেয়ে সোনালী সরকার (১০) এগিয়ে আসলে তারাও বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বিষয়টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পর গত ২ মে হাইকোর্টের আইনজীবী চঞ্চল বিশ্বাস একটি রিট করেন। রোববার চঞ্চলের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অমিত দাসগুপ্ত ও ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরদার। শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেন।