বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে গত বছর দুই দফা অযৌক্তিকভাবে ভাড়া বাড়ায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। সম্প্রতি সরকার পরিবহন জ্বালানীপণ্য ডিজেল, পেট্রোল, অকটেনের দাম কমালেও সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে ভাড়া কমানোর কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ আলফাত স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্ট) থেকে সিলেটের আম্বরখানা পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ৬৯ কিলোমিটার। বাস চলাচল করে মল্লিকপুর-কুমারগাঁও পর্যন্ত। যার দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এই দূরত্বপথে সুনামগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি, সুনামগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপ, সুনামগঞ্জ মিনিবাস মালিক সমিতি, সিলেট মোটর বাস মালিক সমিতি, সিলেট মিনিবাস মালিক সমিতির প্রায় ৩৫০টি মিনিবাস যাতায়াত করে। সরকারি নিয়মে এই পথে ৮৭ টাকা ভাড়া আদায় করার কথা থাকলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতারা সরকারি এই নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না। মিনি বাসে ড্রাইভারসহ ৩০টি সিট থাকার কথা থাকলেও তারা আরো ৫টি সিট বাড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। ২০১৫ সনে ফিটনেসবিহীন পুরনো গাড়ি থেকে অতিরিক্ত সিট কমানোর কথা বলে ১০০ টাকা ভাড়া আদায়ের একতরফা সিদ্ধান্ত কার্যকর করে তারা। গত বছরের ৩০ মার্চ সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সভায় সিট বাড়ানোর ছুতোয় অযৌক্তিক ভাড়া বাড়ানোর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পুরনো গাড়ি থেকে অতিরিক্ত সিট তুলে নেওয়ার অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত সুনামগঞ্জ সিলেট মালিক সমিতির লোকজনকেও জানিয়ে দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে চার শতাধিক গাড়ি যাতায়াত করে। এই গাড়িগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ এবং লক্করঝক্কর প্রকৃতির। জানা গেছে, সরকারের জ্বালানী পণ্যের দাম কমার পরও পরিবহন শ্রমিক, চালকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ নানা অপ্রাসঙ্গিক দাবি উত্থাপন করে উল্টো ভাড়া বাড়ানোর চিন্তা করছে।
সুনামগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপের মহাসচিব মোজাম্মেল হক বলেন, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন পেশার মানুষই এখন হাওরের বোরো ফসল নিয়ে ব্যস্ত। যার ফলে আমরা নির্ধারিত সভা করতে পারিনি। আগামী সপ্তাহে আমরা সভা করে ভাড়া নির্ধারণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। পরিবহন শ্রমিকদের ভাতা বৃদ্ধি এবং নিতপণ্যের দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে কেন্দ্রীয় নেতারা ভাড়া বৃদ্ধি বিষয়ে প্রস্তাব রেখেছেন বলে তিনি জানান।
সিলেট মোটর বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে বাস ভাড়া বৃদ্ধি বা কমানো বিষয়ে আমরা এখনো কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছিনি। তবে শীঘ্রই আমার ভাড়া নির্ধারণ বিষয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত নেব।