ছাতক প্রতিনিধি ::
ছাতকের পল্লীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ, শিশুসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ৮ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকেলে নোয়ারাই ইউনিয়নের বড়গল্লা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অন্তত ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে আব্দুল করিম (৬০) ও মুহিবুর রহমান (১৮) নামের দু’ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরগল্লা গ্রামের মৃত মজিদ মিয়ার পুত্র আব্দুল করিম ও মৃত ছৈদ আলীর পুত্র মনির মিয়া পক্ষদ্বয়ের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে আব্দুল করিম ও মনির মিয়ার মধ্যে গ্রামের রাস্তায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম উত্তেজনা। বিষয়টি থানা পর্যায়ে গড়ালে শনিবার দুপুরে পুলিশের মধ্যস্থতায় এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে সালিশে নিঃষ্পত্তির জন্য দু’পক্ষের সম্মতি নেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পরপরই দু’পক্ষ তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে সংঘর্ষ সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে গোটা এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অন্তত ৫ রাউন্ট ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশ, নারী ও শিশুসহ উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। গুরুতর আহত মটুক মিয়া (৪০), রাকিব আলী (২০), মুজিব (১৮), সালমান (২২), মিছির আলী (৭০), রাজু (২২), আব্দুল আহাদ (৪০) ও মখলিছ আলী (৫৫)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া কনস্টেবল মিলকান আহমদ সাকিব, মালা বিবি (৫০), তুহিন আলম (২২), লায়েক মিয়া (২৬), জয়মালা (৪৫), শামীম (২৫), রুবেল (১৯), শিপলু (১৮), জাকির আলী (৩৫), আফরোজ আলী (৩০), রহিম আলী (২৬), আলী আকবর (৮), আব্দুল জহুর (৩০), ইব্রাহিম (১৮), খুর্শিদ মিয়া (৫০), ইয়াছিন (২৫), মিয়াধন আলী (৫৫), আলাল আহমদ (২৪), শহিদ আলী (২৬), মঞ্জুর আলম (১৮), রহিম আলী (৩২), শাহীনা বেগম (১৮), সোমা বেগম (১৪), শাহানারা বেগম (৩০), আব্দুল হামিদ (২৬), নাজমা বেগম (২২)সহ অন্যান্য আহতদের ছাতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে একটি রামদা ও একটি হকিস্টিক উদ্ধারসহ আব্দুল করিম (৬০) ও মুহিবুর রহমান (১৮) নামের দু’ ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।
ছাতক থানার ওসি আশেক সুজা মামুন ৫ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ার কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে।