সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সুনামগঞ্জসহ অন্যান্য হাওর অঞ্চলকে অবিলম্বে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করাসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি সৈয়দ আবুল মকসুদ। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাপা, গ্রিন ভয়েস, হাওর অঞ্চলবাসী, আইনের পাঠশালা, ভাটিবাংলা সংস্কৃতি পরিষদ ও বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ দাবি জানান।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র সাধারণ স¤পাদক আব্দুল মতিন, ভাটি বাংলা সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি বোরহান উদ্দিন, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সহ-সভাপতি নাজমুল ইসলাম লাকি ও সুনামগঞ্জ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেলন হোসেন মেনন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত সপ্তাহে বাঁধ ভেঙে হঠাৎ আগাম বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা এবং কিশোরগঞ্জসহ হাওর অঞ্চলের ৭ জেলায় ইরি-বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। এতদাঞ্চলের পুরোটাই আজ পানির নিচে। যে সময় কৃষকরা ফসল ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের চোখে মুখে হাসির ঝলক থাকার কথা, এই আগাম বন্যা তাদের সেই হাসি কেড়ে নিয়েছে।
তারা আরও বলেন, আগামী দিনগুলোর কথা ভেবে কৃষক আজ দিশেহারা। ফসল হারা কৃষকের সামনে একটাই জিজ্ঞাসা, আগামী দিনগুলোতে কিভাবে বেঁচে থাকবে সে তার পরিবার পরিজনকে নিয়ে। আমাদের দেশের মোট উৎপাদিত ধানের এক পঞ্চমাংশ আসে হাওর থেকে। তাই হাওরের ধান এই অঞ্চলেরই শুধু নয় সমগ্র বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে স¤পৃক্ত।
এসময় বন্যাকবলিত হাওর অঞ্চলকে অবিলম্বে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করাসহ ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হল- বন্যাকবলিত এলাকায় অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, পরবর্তী ফসল ঘরে না ওঠা পর্যšন্তকৃষকদের ভিজিএফ কর্মসূচির অধীনে খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া, আগামী মৌসুমে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ সরবরাহ, তাদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান কর্মসূচি চালু করা, বর্তমান ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত কৃষি ও এনজিও ঋণ মওকুফ করা, নতুন করে চাষাবাদের জন্য বিনা সুদে নতুন কৃষি ঋণ দেওয়া।
এছাড়াও বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে গাফিলতির জন্য দায়ী সরকারি কর্মকর্তার পদত্যাগ ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে শাস্তি ব্যবস্থা করা, হাওর উন্নয়ন বোর্ডকে সচল করে হাওর উন্ননের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা, নদী ও জলাশয়কে দীর্ঘ বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ আটকে দেওয়ার পরিবেশ বিধ্বংসী নীতি ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়।