স্টাফ রিপোর্টার ::
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সিলেট বিভাগে ৫ জন জয়িতাকে শ্রেষ্ঠ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের দুইজন রয়েছেন। ‘সফল জননী নারী’ ক্যাটাগরিতে প্রথম হন দিরাই উপজেলার ডেইজী তালুকদার এবং ‘নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে নতুন জীবন শুরু করেছেন যে নারী’ ক্যাটাগরিতে প্রথম হন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জান্নাতুন নাহার। মঙ্গলবার তাঁদেরকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া ‘অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী’ ক্যাটাগরিতে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম হন সিলেট নগরীর হাওয়াপাড়া এলাকার নুরুন নাহার বেবী। ‘শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী’ ক্যাটাগরিতে প্রথম হন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ফরিদা ইয়াসমিন এবং ‘সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী’ ক্যাটাগরিতে প্রথম হন সিলেট নগরীর দেবপাড়া এলাকার সমীতা বেগম মীরা।
মঙ্গলবার সকালে সিলেট নগরীর কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে জয়িতাদের সম্মননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার অফিস। সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা থেকে ২০ জন জয়িতাকে সম্মাননা দেয়া হয়। এদের মধ্যে ৫ ক্যাটাগরিতে ৫জনকে বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচিত করা হয়।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. জামাল উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি।
সিলেট জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার (সার্বিক) মতিউর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মেয়র ও সিলেট মহানগর আওযামীলীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান ও হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম।
ভিডিও কনফারেন্সে সচিব নাসিমা বেগম বলেন, বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। এতো বিশাল সংখ্যক নারীদের পেছনে রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। সরকার নারী নীতি বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। নারী নীতি বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। নারী নীতি বাস্তবায়িত হলে সমাজে নারী নির্যাতন বন্ধ হবে এবং নারীদের অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যেই নারী-পুরুষের সমতা অর্জন সম্ভব হবে। মাঠ পর্যায়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করলে কাঙ্খিক লক্ষে পৌঁছা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, বিভাগীয় পর্যায়ের জয়িতাদের মধ্য থেকে পরবর্তীতে ৫জনকে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত করবে সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, জয়িতারা যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন তা একদিনে সফল হয়নি। তারা দীর্ঘ সময় ধরে সংগ্রাম করেছেন। তাঁরা পরিবারিক ও সামাজিক ক্ষেতে অনেক বাধা অতিক্রম করেছেন।
তিনি বলেন, নারীদের না বলা শিখতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত নারীরা এগিয়ে না আসতে ততক্ষণ পর্যন্ত এ নির্যাতন নিরসন হবে না। নির্যাতন প্রতিরোধে নারীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। শত বাধা মোকবিলা করে নারীদের এগিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় পর্যায়ের ৫ শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সংগ্রামী জীবন, কর্ম ও সাফল্যে আলোকে নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ নির্বাচিত সকল জয়িতার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সিলেট বিভাগীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন এবং গীতা পাঠ করেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী সুখেন্দু শেখর শর্মা।